বাংলাদেশ-যুক্তরাজ্য চমৎকার সম্পর্কে আবদ্ধ

বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্য চমৎকার সম্পর্কে আবদ্ধ। বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ নাগরিকদের মাধ্যমে এ সম্পর্ক আরও শক্তিশালী হয়েছে। ব্রিটেনের বিরোধী দলের নেতা এবং লেবার পার্টির প্রধান স্যার কেয়ার স্টারমার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎকালে তিনি এ কথা বলেন। শনিবার লন্ডনে প্রধানমন্ত্রীর সফরকালীন আবাসস্থলে এ সাক্ষাৎ অনুষ্ঠিত হয়।

প্রধানমন্ত্রী ৫ দিনের সফরে যুক্তরাজ্যে রয়েছেন। সফরের শেষ দিন ১৯ সেপ্টেম্বর ব্রিটেনের প্রয়াত রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের রাষ্ট্রীয় অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় যোগ দেবেন তিনি। গত ১৫ সেপ্টেম্বর লন্ডন পৌঁছান প্রধানমন্ত্রী।

প্রধানমন্ত্রীর প্রেস উইং জানায়, স্টারমারের সঙ্গে সাক্ষাতে শেখ হাসিনা রানির মৃত্যুতে তার গভীর শোক পুনর্ব্যক্ত করেছেন।

স্যার স্টারমার রানির স্মরণে শ্রদ্ধা জানানোর জন্য প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান। তারা ব্রিটেনের লেবার পার্টির সাবেক প্রধানমন্ত্রী স্যার হ্যারল্ড উইলসনের সঙ্গে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সাক্ষাৎ এবং ব্যক্তিগত সম্পর্কের কথা স্মরণ করেন।

বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে দেওয়া বাণীর জন্য প্রধানমন্ত্রী লেবার পার্টি নেতাকে ধন্যবাদ জানান।

স্যার স্টারমার ২০১৬ সালে তার বাংলাদেশ সফর এবং সে সময় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তার সাক্ষাতের কথা স্মরণ করেন। তিনি যুক্তরাজ্য জুড়ে লেবার পার্টি থেকে ক্রমবর্ধমান সংখ্যায় বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত নাগরিক প্রতিনিধি নির্বাচিত হওয়ায় সন্তোষ প্রকাশ করেন।

তিনি বলেন, লেবার পার্টি তরুণ প্রজন্মের নেতাদের সহায়তা ও উৎসাহ-উদ্দীপনা দানে কাজ করছে, যা ব্রিটিশ-বাংলাদেশি আরও তরুণদের আকৃষ্ট করবে।

দুই নেতা ইউক্রেনের যুদ্ধের প্রভাব বিশেষ করে গ্লোবাল সাউথের ওপর আলোচনা করেন।

প্রধানমন্ত্রী বিশ্বব্যাপী সাধারণ মানুষকে খাদ্য, জ্বালানি ও আর্থিক নিরাপত্তাহীনতা থেকে রক্ষা করতে আলোচনার মাধ্যমে সংঘাতের নিষ্পত্তির প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন। তিনি যুদ্ধের পরিপ্রেক্ষিতে আরোপিত নিষেধাজ্ঞাগুলো উন্নয়নশীল দেশগুলোর জনগণের ওপর ভিন্ন রকম প্রভাব ফেলছে কি না, তা পর্যালোচনার পরামর্শ দেন।

উভয় পক্ষ চলমান মুদ্রাস্ফীতির চাপ এবং জীবনযাত্রার ব্যয় সংকোচনের কারণে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কে সম্ভাব্য প্রভাব সম্পর্কে মতবিনিময় করে।

লেবার পার্টির নেতা বলেন, তারা যুক্তরাজ্য ও পশ্চিমের বড় খুচরা বিক্রেতাদের জন্য তৈরি পোশাক প্রস্তুতকারকদের সঙ্গে ব্যয় ভাগ করে নেওয়ার পক্ষে সমর্থন অব্যাহত রাখবে।

স্যার স্টারমার প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে বাংলাদেশের কোভিড-১৯ মহামারি মোকাবিলার প্রশংসা করেন। তিনি জলবায়ু পরিবর্তন ইস্যুতে বাংলাদেশের মতো ঝুঁকিপূর্ণ দেশের সঙ্গে কাজ করার জন্য লেবার পার্টির প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী দুই দেশের মধ্যে জলবায়ু অংশীদারিত্ব প্রসারের প্রশংসা করেন।

শেখ হাসিনা মিয়ানমারের রোহিঙ্গাদের দীর্ঘস্থায়ী উপস্থিতির কারণে বাংলাদেশের ওপর ক্রমবর্ধমান বোঝা সম্পর্কে লেবার পার্টির নেতাকে অবহিত করেন।

তারা বাংলাদেশের সীমান্তের কাছাকাছি সশস্ত্র সংঘাতের সাম্প্রতিক বিস্তার নিয়ে আলোচনা করেন। প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন, বাংলাদেশ তার ভূখণ্ডের অভ্যন্তরে সংঘাতের (মিয়ানমারের) প্রভাব এসে পড়া সত্ত্বেও সর্বোচ্চ সংযম অনুশীলন করছে।

পরে মেরিলেবোনের লর্ড স্বরাজ পাল প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। যুক্তরাজ্যের হাউস অব লর্ডসের প্রবীণ এ সদস্য প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বের জন্য তার প্রশংসা পুনর্ব্যক্ত করেন। তিনি দুই দেশের মধ্যে ব্যবসা ও শিক্ষার অংশীদারিত্ব আরও এগিয়ে নিতে আগ্রহ প্রকাশ করেন।

শেয়ার করলে অনুপ্রাণিত হবো...।

Comments

comments

বাংলাদেশ-যুক্তরাজ্য চমৎকার সম্পর্কে আবদ্ধ

বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্য চমৎকার সম্পর্কে আবদ্ধ। বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ নাগরিকদের মাধ্যমে এ সম্পর্ক আরও শক্তিশালী হয়েছে। ব্রিটেনের বিরোধী দলের নেতা এবং লেবার পার্টির প্রধান স্যার কেয়ার স্টারমার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎকালে তিনি এ কথা বলেন। শনিবার লন্ডনে প্রধানমন্ত্রীর সফরকালীন আবাসস্থলে এ সাক্ষাৎ অনুষ্ঠিত হয়।

প্রধানমন্ত্রী ৫ দিনের সফরে যুক্তরাজ্যে রয়েছেন। সফরের শেষ দিন ১৯ সেপ্টেম্বর ব্রিটেনের প্রয়াত রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের রাষ্ট্রীয় অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় যোগ দেবেন তিনি। গত ১৫ সেপ্টেম্বর লন্ডন পৌঁছান প্রধানমন্ত্রী।

প্রধানমন্ত্রীর প্রেস উইং জানায়, স্টারমারের সঙ্গে সাক্ষাতে শেখ হাসিনা রানির মৃত্যুতে তার গভীর শোক পুনর্ব্যক্ত করেছেন।

স্যার স্টারমার রানির স্মরণে শ্রদ্ধা জানানোর জন্য প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান। তারা ব্রিটেনের লেবার পার্টির সাবেক প্রধানমন্ত্রী স্যার হ্যারল্ড উইলসনের সঙ্গে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সাক্ষাৎ এবং ব্যক্তিগত সম্পর্কের কথা স্মরণ করেন।

বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে দেওয়া বাণীর জন্য প্রধানমন্ত্রী লেবার পার্টি নেতাকে ধন্যবাদ জানান।

স্যার স্টারমার ২০১৬ সালে তার বাংলাদেশ সফর এবং সে সময় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তার সাক্ষাতের কথা স্মরণ করেন। তিনি যুক্তরাজ্য জুড়ে লেবার পার্টি থেকে ক্রমবর্ধমান সংখ্যায় বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত নাগরিক প্রতিনিধি নির্বাচিত হওয়ায় সন্তোষ প্রকাশ করেন।

তিনি বলেন, লেবার পার্টি তরুণ প্রজন্মের নেতাদের সহায়তা ও উৎসাহ-উদ্দীপনা দানে কাজ করছে, যা ব্রিটিশ-বাংলাদেশি আরও তরুণদের আকৃষ্ট করবে।

দুই নেতা ইউক্রেনের যুদ্ধের প্রভাব বিশেষ করে গ্লোবাল সাউথের ওপর আলোচনা করেন।

প্রধানমন্ত্রী বিশ্বব্যাপী সাধারণ মানুষকে খাদ্য, জ্বালানি ও আর্থিক নিরাপত্তাহীনতা থেকে রক্ষা করতে আলোচনার মাধ্যমে সংঘাতের নিষ্পত্তির প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন। তিনি যুদ্ধের পরিপ্রেক্ষিতে আরোপিত নিষেধাজ্ঞাগুলো উন্নয়নশীল দেশগুলোর জনগণের ওপর ভিন্ন রকম প্রভাব ফেলছে কি না, তা পর্যালোচনার পরামর্শ দেন।

উভয় পক্ষ চলমান মুদ্রাস্ফীতির চাপ এবং জীবনযাত্রার ব্যয় সংকোচনের কারণে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কে সম্ভাব্য প্রভাব সম্পর্কে মতবিনিময় করে।

লেবার পার্টির নেতা বলেন, তারা যুক্তরাজ্য ও পশ্চিমের বড় খুচরা বিক্রেতাদের জন্য তৈরি পোশাক প্রস্তুতকারকদের সঙ্গে ব্যয় ভাগ করে নেওয়ার পক্ষে সমর্থন অব্যাহত রাখবে।

স্যার স্টারমার প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে বাংলাদেশের কোভিড-১৯ মহামারি মোকাবিলার প্রশংসা করেন। তিনি জলবায়ু পরিবর্তন ইস্যুতে বাংলাদেশের মতো ঝুঁকিপূর্ণ দেশের সঙ্গে কাজ করার জন্য লেবার পার্টির প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী দুই দেশের মধ্যে জলবায়ু অংশীদারিত্ব প্রসারের প্রশংসা করেন।

শেখ হাসিনা মিয়ানমারের রোহিঙ্গাদের দীর্ঘস্থায়ী উপস্থিতির কারণে বাংলাদেশের ওপর ক্রমবর্ধমান বোঝা সম্পর্কে লেবার পার্টির নেতাকে অবহিত করেন।

তারা বাংলাদেশের সীমান্তের কাছাকাছি সশস্ত্র সংঘাতের সাম্প্রতিক বিস্তার নিয়ে আলোচনা করেন। প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন, বাংলাদেশ তার ভূখণ্ডের অভ্যন্তরে সংঘাতের (মিয়ানমারের) প্রভাব এসে পড়া সত্ত্বেও সর্বোচ্চ সংযম অনুশীলন করছে।

পরে মেরিলেবোনের লর্ড স্বরাজ পাল প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। যুক্তরাজ্যের হাউস অব লর্ডসের প্রবীণ এ সদস্য প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বের জন্য তার প্রশংসা পুনর্ব্যক্ত করেন। তিনি দুই দেশের মধ্যে ব্যবসা ও শিক্ষার অংশীদারিত্ব আরও এগিয়ে নিতে আগ্রহ প্রকাশ করেন।

শেয়ার করলে অনুপ্রাণিত হবো...।

Comments

comments

error: Content is protected !!